ইদানীং একটা বিষয় নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে সেটা হলো টিকেট কেটে ট্রেনে উঠতে চাওয়া মানুষ কেনো ট্রেনে উঠার আগেই জরিমানা দিয়ে টিকেট কাটবে। এরফলে মানুষ স্টেশনে টিকেট সংশ্লিষ্ট স্টাফদের (টিটিই, টিসি, বুকিং সহকারী) উপর খুবই ক্ষিপ্ত। কিন্তু সমস্যা হলো বিষয়টা তো তাদের হাতে নেই বা বলা যায় তাদের ক্ষমতার বাইরে৷
বর্তমান বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত আইন/ নিয়ম অনুযায়ী সিট বরাদ্দের সর্বোচ্চ ২৫% স্টান্ডিং টিকেট কাউন্টার থেকে ইস্যু হবে। ধরেন ঢাকা থেকে কোনো একটা স্টেশনের জন্য ৫০ টা আসন বরাদ্দ, ফলে সেই স্টেশনের জন্য কাউন্টার থেকে ১২/১৩ টার বেশি স্টান্ডিং টিকেট ইস্যু হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু মানুষের চাপ থাকে কমপক্ষে ১৫০ জনের। ফলে বাকী ১৩৭/১৩৮ জন মানুষ যারা ট্রেনে যেতে চান তাদের জরিমানা সহ টিকেট কাটতে হয়৷ কিন্তু সাধারণ মানুষের যুক্তি হলো কেনো তাঁরা ট্রেনে উঠার আগে টিকেট কেটে জরিমানা দিবেন।
এরফলে কয়েকটি দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রেল।
- যেমন তাঁরা অনেকেই নিয়ম না জেনে টিটিই/টিসিদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন, ফলে দিনদিন কর্মরত এসব সাধারণ স্টাফগুলো কোনো রকমের অপরাধ না করেও প্রচন্ড রকমের মানসিক বিষন্নতায় ভোগেন।
- যে লোকটা আজকে ট্রেনে উঠার আগেই জরিমানা দিয়ে টিকেট কাটলো, আগামীকাল সে ট্রেনে উঠার সময় চিন্তা করবে কেনো আমি জরিমানা দিবো তারচেয়ে বরং স্টাফদের সাথে লিয়াজো করার চেষ্টা করি৷ তাতে বরং কম টাকায় যেতে পারবো। এরফলে ফুলেফেঁপে উঠতেছে অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকা লোকটি কিন্তু আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রেলওয়ে, তথা সরকার তথা সামগ্রিক অর্থনীতি৷
ফলে আমার মতে বাংলাদেশ রেলওয়ের উচিত কমপক্ষে সিটের শতভাগ স্টান্ডিং টিকেট ইস্যু করা। কিংবা স্টেশন থেকে জরিমানা ছাড়া স্টান্ডিং টিকেট ইস্যু করা। তবে ট্রেনের ভিতরে টিকেট ছাড়া পেলে তাদের অবশ্যই কমপক্ষে দ্বিগুণ জরিমানা করা।
কিন্তু কথা উঠতে পারে দূরের যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য যেখানে মানুষ চায় স্টান্ডিং টিকেট বন্ধ হোক সেখানে আমি কেনো চাই স্টান্ডিং টিকেট বাড়িয়ে দিতে। এর একটাই কারণ সেটা হলো রেলের ঘোষণা দেয়া ২৫% স্টান্ডিং যাত্রী এর বাস্তবায়ন তো রেল করতে পারে না৷ দুইটা বড় কারণ উল্লেখ করা যায়, জনবলের ঘাটতি আর দেশের কমপক্ষে ৯৮% স্টেশন উন্মুক্ত। ফলে দূরের যাত্রীদের কষ্ট ঠিকই হচ্ছে, মাঝে উদ্ভট নিয়মের ফাঁদে পড়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রেল নিজে এবং সাধারণ মানুষ। আর লাভবান হচ্ছে অসাধুরা। আবার টিটিই/টিসিরাও মানষিক বিষাদগ্রস্ত হচ্ছে।
তাই আপনারা সংশ্লিষ্ট ছোটো স্টাফদের সাথে খারাপ ব্যবহার না করে আইন/নিয়ম সংস্কারের দাবি জানান৷
একটা বিষয় অনেকেই জানতে চানঃ সেটার উত্তর হলো আপনাদের হাতে যে টিকেটটি দেয়া হয় সেখানে যে টাকার পরিমাণ উল্লেখ থাকে পুরোটাই সরকারি কোষাগারে জমা হয়। উল্লেখিত টাকার পরিমাণ এর চেয়ে কেউ যদি বেশি দাবি করে তবে সেটা অনৈতিক।